১. সিঙ্কোনা অফিসিন্যালিস
২. সিঙ্কোনা ক্যালিসিয়া
৩. সিঙ্কোনা কডিফোলিয়া
৪. সিঙ্কোনা ফ্লাভা
৫. কুইন কুইনা
৬. জেসুইস বার্ক
৭. পেরুভিয়ান বার্ক
প্রুভার
১৭৯০ সালে স্যামুয়েল হ্যানিম্যান তার নিজের উপর প্রথম সিঙ্কোনা ছালের গুনাগুন পরিক্ষা করেন।
উৎস গাছের বর্ণনা-
সিঙ্কোনা গাছ হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়। গাছের শাখা-প্রশাখা, কান্ড এবং মূল হইতে সিঙ্কোনা ছাল
সংগ্রহ করা হয়।সিনকোনা গাছ ১০-৩০ মিটার উঁচু হয়। এই গাছ বিভিন্ন জাতীয় হইতে পারে। পাতা বিপরীতমুখী, ১০-৪০ সে.মি. লম্বা। ফুল সাদা, গোলাপী বা লাল বর্ণের হয়। ছোট ক্যাপস্যুলের মত ফলের মধ্যে অনেকগুলো বীজ থাকে।
ধাতু প্রকৃতি
বলিষ্ট ব্যক্তি অথবা এক সময় সবল ছিল কিন্তু অতিরিক্ত রক্তস্রাব, মৈথুনের ফল, স্বপ্নদোষের ফলে, শুক্রক্ষরণ, প্রদরস্রাব, লালাস্রাব, মলস্রাব, পুঁজস্রাব, স্থন্যদান ইত্যাদির ফলে শরীর হইতে তরল পদার্থের ক্ষয় দুর্বল হয়ে পড়িয়াছে।
ক্রিয়াস্থান
সমস্ত স্নায়ুমন্ডলীর উপর, লিভার, পাকাশয়, গ্যাংলিয়োনিক নার্ভাস সিস্টেমের উপর ইহার প্রধান ক্রিয়া, রক্তে বিশেষ ক্রিয়া।
প্রয়োগক্ষেত্র
রক্তহীনতা, রক্তস্রাব, দুর্বলতা, অজীর্ন, উদারাময়, কামলা বা ন্যাবা, শ্বাসযন্ত্রর পীড়া, শিরঃপীড়া, জ্বর, স্বপ্নদোষ, দন্ত ও চক্ষুর পীড়া, স্ত্রীরোগ, পেটফাপা,স্নায়ূশূল ইত্যাদিতে।
লক্ষণ বৃদ্ধি
অল্প স্পর্শে, বায়ু প্রবাহে, একদিন অন্তর, তরল পদার্থের ক্ষয়ে, রাত্রে, আহারের ফলে, সামনের দিকে ঝুঁকলে।
লক্ষণ উপশম
উপুড় হইলে, দাঁতে ও মাথায় জোরে চাপ দিলে, মুক্ত বাতাসে এবং উত্তপে।
ক্রিয়ানাশক
আরনিকা, আর্সেনিক, নাক্স, সিপিয়া।
ক্রিয়াকাল
ক্রিয়া –১৪- ২১ দিন।
ক্রমঃ Q-200X ও উচ্চ শক্তি।
ঔষধী ব্যবহার-
সিনকোনা গাছে ঔষধি গুণ আবিষ্কার করে পেরু, বলিভিয়া ও ইকুয়েডর অঞ্চলের কুইচুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। নিম্ন তাপমাত্রায় কম্পন থেকে রক্ষা পেতে তারা দীর্ঘকাল ধরে এই গাছের চাষ করে। ম্যালেরিয়া জ্বরে তীব্র কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এই কাঁপুনি নিরাময়ে তারা সিনকোনা গাছের পাতা ব্যবহার করতো। জেসুইট মিশনারীগণ সিনকোনা গাছ প্রথম ইউরোপে নিয়ে আসে।
চায়না অফিসিনালিসঃ
সদৃশ : সিঙ্কোনা গাছের ছাল যেমন খুব তিতা, ঠিক তেমনি সিঙ্কোনা গাছ থেকে তৈরি চায়না ওষুধ'টির রোগীর আচরণ খুব তিতা বা খারাপ। এবং মুখের বা জিহ্বার স্বাদ প্রায় তিতা থাকে।যে কোন কিছু চায়না, সেই বুঝি চায়নার রোগী।
তাহলে একটু পরখ করে দেখা যাক :
আগে একটি ভিডিও লেকচার দেখে নেই- উপস্থাপন করেছেন আমাদের সবার পরিচিত-Dr.Asraful Haque
ভালো ব্যবহার করতে চায়না : কারণ বদমেজাজী, সামান্য কথায় চটে যায়, তর্ক করে, গালাগাল করে, ঝগড়া করে, এমন বাজে ব্যবহার করে যে, পরে নিজেই লজ্জিত হয়। স্নায়বিক উত্তেজনার কারণে নিজেকে সংযত বা সংশোধন করতে পারে না।
এক হাত ঠান্ডা তো আরেক হাত গরম।
বেঁচে থাকতে চায়না : কারণ হতাশা, বিমর্ষতা, উৎসাহহীনতা ও উদাসীনতায় ভোগে। আত্মহত্যা করতে চায়, বাড়ি থেকে চলে যেতে চায় কিন্তু সাহসে কুলায় না।
অনাবৃত বা খালি গায়ে থাকতে চায়না : কারণ খালি গায়ে থাকলে তার সমস্ত রোগলক্ষণ বা উপসর্গ বৃদ্ধি পায়।
সাধারণত কথা বলতে চায়না : কারণ অসুস্থতার ফলে তার মেজাজ খিটখিটে থাকে।
কাজ করতে চায়না : কারণ অসুস্থতার জন্য তার শরীর খুব দুর্বল থাকে।
মানসিক বা শারীরিক আঘাত পেলে কাউকে বলতে চায়না।
ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখা করতে চায়না।
আদর চায়না, আদর করলে রাগ হয়।
ফল খেতে চায়না।
অসুস্থ হলেও ডাক্তারের কাছে সহজে যেতে চায়না। শিশুরা অসুস্থ হলেও বাবা মাকে কিছু না বলে প্রায়ই চুপচাপ শুয়ে থাকে।
খেলাধুলা করতে চায়না।
মনখুলে হাসি ঠাট্টা, রসের বা মজার কথা বলতে চায়না।
কোন আনন্দময় অনুষ্ঠানের জন্য গয়না বা পোশাকের জন্য উৎসাহ দেখাতে চায়না।
অসুস্থ থাকলেও সেবা-যত্ন চায়না।
কাজকর্ম, পড়াশোনা কোন কিছুতেই মন বসতে চায়না।
বাস্তবে তেমন কিছু করতে চায়না, কিন্তু কল্পনাই রাজপ্রাসাদ বানাতে চায়, অনেক কিছু করতে চায়।
তামাকের গন্ধ, সুগন্ধ, দুর্গন্ধ এমনকি ফুলের গন্ধ নিতে চায়না : কারণ এগুলো সহ্য হয় না।
ব্যথাযুক্ত বা আক্রান্ত স্থান ধীরে ধীরে নড়াতে চায়না : কারণ তাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। জোরে জোরে নড়াতে চায় কারণ তাতে উপশম হয়।
আক্রান্ত স্থানে ঢিলা করে পোশাক বা জুতা পরতে চায়না : কারণ তাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। ফলে টাইট করে পরে।
রুটি, মাখন, মাংস, চর্বিযুক্ত গুরুপাক খাদ্য খেতে চায়না।
যদিও হজম হতে চায়না তবুও কারো কারো ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খেতে ইচ্ছে করে।
খাদ্য যা খায় শরীরে কোন উপকারে আসতে চায়না। ফলে যে কোনো রোগে রস-রক্ত ক্ষয়ের পর শরীর জীর্ণ, দুর্বল ও ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য একবার নষ্ট হলে, সহজে ভালো হতে চায়না।
মুখের স্বাদ ভালো থাকতে চায়না, তিতা, নোনতা লাগে।
যা খায়, ঠিকমতো হজম হতে চায়না, বমি বা মলের সাথে গোটা গোটা বের হয়ে যায়।
লেবুর শরবত, টক মিষ্টি ফল, টক মিষ্টি আচার, টক, শরীর সতেজকারী বস্তু হাতছাড়া করতে চায়না : কারণ এগুলো খুব পছন্দ। যদিও সেগুলো ক্ষতি করে।
পেট ফাঁপায় তরুণ অবস্থায় চায়নায় উপকার হলেও পুরাতন অবস্থায় বিশেষ উপকার হতে চায়না।
পেট ফাঁপা ঢেঁকুরে উপশম হতে চায়না।
একা থাকতে কিংবা সঙ্গী ছাড়া কোথাও যেতে চায়না : কারণ শরীর ভেঙে পড়েছে ফলে মন আতঙ্কিত। আত্মবিশ্বাসের অভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
রোমান্টিক গান তেমনটা শুনতে চায়না কিন্তু প্রেমে ব্যর্থ হয়ে পুরনো দিনের বিরহের গান শুনতে চায়।
ক্ষুধা লাগলেও সহজে খেতে চায়না। শিশুরা ক্ষুধা লাগলেও খাওয়ার জন্য তেমন কান্না করে না।
কুকুরের আশেপাশে যেতে চায়না : কারণ কুকুর দেখে ভীষণ ভয় পায়।
জীব-জন্তুর কাছাকাছি যেতে চায়না : কারণ জীব-জন্তুর ভীষণ ভয়, এমন কি প্যাঁচার ডাকেও ভয় পায়।
আক্রান্ত স্থান বা ব্যথার স্থান হালকা ভাবে স্পর্শ করতে চায়না : কারণ তাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায় বরং জোরে চেপে ধরলে উপশম হয়।
নিজে কাউকে ভালবাসতে চায়না।
এমন কি অন্যের ভালবাসা বা সহানুভূতি চায়না।
শরীরের যে সকল অঙ্গে পাথুরি হয়, চায়না প্রয়োগে সেখানে নতুন করে পাথুরি উৎপন্ন হতে দিতে চায়না।
যথা : পিত্তপাথুরি, কিডনি পাথুরি, মূত্র পাথুরি, প্যানক্রিয়াসের পাথুরি, ওষুধ দিয়ে কিংবা অপারেশন করে সারালেও উক্ত স্থানে বারবার পাথুরি জন্মে।
কারণ যে স্থানে একবার পাথুরি হয়, সেখানে বারবার পাথুরি জন্মাবার প্রবণতা দেখা যায়, ইহাই পাথুরির বৈশিষ্ট্য।
তাই চিকিৎসার ফাঁকে বা শেষে ২/১ দাগ উচ্চশক্তির চায়না প্রয়োগ করলে নতুন করে পাথুরি জন্মাতে চায়না।
ডা. হ্যানিম্যান বলেন পাথুরির ব্যথাসহ যে কোন ব্যথায় যদি আক্রান্ত স্থান সামান্য স্পর্শে বা নড়াচড়ায় বৃদ্ধি বা অসহ্যবোধ করে, কিন্তু জোরে চাপলে উপশম হয়, আর ব্যথা যদি বারবার ফিরে আসে,
বিশেষ করে পাথুরির ব্যথা যদি নির্দিষ্ট সময় পরপর ফিরে আসে, তাহলে একমাত্রা চায়না তা আরোগ্য করে।
ডা. থেয়ার বলেন, "এই লক্ষণে আমার ২০ বছরের চিকিৎসা জীবনে বহু পাথুরীর রোগী সারিয়েছি, কখনো ব্যর্থ হইনি"।
ওষুদের নামের মধ্যেই ওষুধের মূল লক্ষণ সমূহ অন্ত:র্নিহিত যথা : ( Dr. Asraful Haque)
CHINA OFF
C : Cheerful Night : রাতে আনন্দিত।
H : Haughty : অভদ্র।
I : Imbecility : মানসিক/শারীরিক দুর্বলতা।
N : No Dimand : কোন চাহিদা নাই।
A : Anger Suddenly : হঠাৎ ক্রোধ।
O : Obscene : অশ্লীল।
F : Frightened : ভীত।
F : Forgetful : অমনোযোগী।
পরবর্তী ঔসধঃ
ফেরাম, আর্সেনিক, বেলেডোনা, লযাকে, মারক্সল, পালস, সালফার।
0 মন্তব্যসমূহ